দেশের জনগণের স্বার্থে বছর তিনেক আগে কেনা একটি উড়োজাহাজ বিক্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দিলেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর।
উড়োজাহাজ বিক্রির অর্থ কী কাজে লাগানো হবে, তাও জানিয়েছেন তিনি। দেশটির অন্যতম প্রধান সমস্যা অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হবে এই অর্থ।
ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করার হুমকি এড়াতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে মেক্সিকো। চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ঠেকাতে আরো বড় পরিসরে উদ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মেক্সিকো। চুক্তি হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় প্লেন বিক্রির এ ঘোষণা দিলেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্ট।
অবশ্য ২০১৮ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময়ই বামপন্থী লোপেজ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্টকে বহনের জন্য ব্যবহৃত উড়োজাহাজ বিক্রি করে সে অর্থ দেশের গরিব মানুষের জন্য ব্যয় করা হবে।
সে সময় প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, ‘বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার’ উড়োজাহাজটির বাজারমূল্য ১৫ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে বিমানটি প্রায় ২২ কোটি মার্কিন ডলার দিয়ে কেনা হয়েছিল।
নিজ দেশে ‘অ্যামলো’ (নিজের নামের আদ্যাক্ষর—এএমএলও) নামে পরিচিত মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণার সময় সমর্থকদের বলেছিলেন, প্লেন বিক্রি করে তিনি বাণিজ্যিক বিমানে যাতায়াত করবেন।
নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই নিজের প্রতিশ্রুতিকে বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছেন অ্যামলো।
বিক্রি হচ্ছে আরো অনেক কিছু
বিক্রির অপেক্ষায় থাকা প্রেসিডেন্টের জেটটি কয়েক মাস ধরেই ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ওয়্যারহাউসে রাখা আছে। এই প্লেনটি ছাড়াও সরকারি মালিকানাধীন আরো ৬০টি বিমান ও ৭০টি হেলিকপ্টার বিক্রি করছে মেক্সিকো।
অভিবাসন বন্ধে এ উদ্যোগ কীভাবে কাজে আসবে?
আগেই বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্প্রতি হওয়া চুক্তি অনুসারে অবৈধ অভিবাসন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে মেক্সিকো। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব পণ্য রপ্তানি করবে মেক্সিকো, সেগুলোর ওপর উচ্চ শুল্কহার আরোপ করবে না ট্রাম্প প্রশাসন।
চুক্তির একটি ধারা অনুযায়ী, মেক্সিকো দেশটির দক্ষিণে গুয়াতেমালা সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ড বসাবে।
গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে লোপেজের কাছে এ চুক্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘চুক্তি বাস্তবায়নে কেমন খরচ হবে, সেটা নিয়ে এটুকুই বলি, আমাদের পর্যাপ্ত বাজেট আছে। প্রেসিডেন্টের বিলাসবহুল উড়োজাহাজ বিক্রি করে সে অর্থের জোগান দেওয়া হবে।’
কী আছে মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিতে?
যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার রাষ্ট্র মেক্সিকো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়েছিলেন, মেক্সিকো থেকে পণ্য আমদানিতে ৫ শতাংশ হারে শুল্ক বসানো হবে। কিন্তু গত সপ্তাহে স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমে মেক্সিকো সেই শুল্ক আরোপ এড়িয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, অভিবাসন রোধে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গুয়াতেমালার সীমান্তে ছয় হাজার ন্যাশনাল গার্ড পাঠাচ্ছে মেক্সিকো।
এ ছাড়া চুক্তির আরেকটি শর্ত হলো, মেক্সিকো পাড়ি দিয়ে যারা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চেয়েছে, তাদের মেক্সিকোতে ফিরিয়ে আনতে হবে।
গত ৫ জুন যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ জানিয়েছিল, মে মাসে গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ হারে মেক্সিকো থেকে অবৈধ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত প্রহরীরা মে মাসে এক লাখ ৩২ হাজার ৮৮৭ অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে। এর আগের মাসের (এপ্রিল) চেয়ে এ হার ৩৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া মেক্সিকোতে ফেরত পাঠানো হয়েছে আরো ১১ হাজার ৩৯২ জনকে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এসব অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারীদের মধ্যে সাড়ে ১১ হাজারের বেশি পরিবারবিহীন শিশুও রয়েছে।
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এটাই এক মাসে অনুপ্রবেশকারী আটকের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
প্লেন বিক্রির ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া কী?
প্রেসিডেন্টের উড়োজাহাজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠেছে। প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা করছেন কেউ কেউ।
তাঁদের দাবি, মেক্সিকোর জনগণের করের অর্থ দিয়ে কেনা বিমান বিক্রি করে অ-মেক্সিকানদের অভিবাসন ঠেকানোর কাজে ব্যবহার করা হবে।
আবার কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, গত ছয় মাসেও যখন বিক্রি হয়নি প্লেনটি, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির ৪৫ দিন মেয়াদের মধ্যে এই বিমানের ক্রেতা খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে না।
Patti Stanger Will Make Darn Well Certain We Have Better Luck in Enjoy In 2010
Patti Stanger Will Make Darn Well Certain We Have Better Luck in Enjoy In 2010 If you should be perhaps...
Discussion about this post