জেনোসাইড ওয়াচ নামক একটি সংগঠন ভারতকে কাশ্মীরে গণহত্যা সংঘটিত না করতে সতর্কবার্তা জারি করেছে। পাশাপাশি নাগরিকত্ব ইস্যুতে আসাম প্রদেশেও গণহত্যা সংঘটিত না করার সতর্কবার্তা জারি করা হয়। নিজস্ব ওয়েবসাইটে জেনোসাইড ওয়াচ এ সতর্কবার্তা জারি করে।
বৈশ্বিক সংগঠন জেনোসাইড ওয়াচ বিশ্বে গণহত্যা প্রতিরোধ, বন্ধ ও এ অপরাধের শাস্তির জন্য কাজ করে। পাশাপাশি সম্ভাব্য গণহত্যা এবং সংঘটিত গণহত্যা সম্পর্কে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে চেষ্টা করে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্যে বিশ্বে গণহত্যা বন্ধ করা।
জেনোসাইড ওয়াচ এর প্রেসিডেন্ট গ্রেগরি এইচ স্ট্যান্টন এর গণহত্যা বিষয়ক দশটি বিষয়ের আলোকে এই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
দশটি বিষয়:
১. শ্রেণীকরণ: কাশ্মীরে নিযুক্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর হিন্দু ও শিখ ধর্মাবলম্বী বনাম মুসলমান নাগরিক বিদ্যমান।
২. প্রতীক: কাশ্মীরের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্রে প্রত্যেকের নাম, ভাষা, পোষাক এবং মসজিদ আছে।
৩. বৈষম্য: ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিকভাবে কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণ করত হিন্দু পণ্ডিতরা। বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপি পুনরায় কাশ্মীরে হিন্দু পণ্ডিতদের প্রভাব বৃদ্ধি করছে।
৪. অমানবিকতা: কাশ্মীরের মুসলমান নাগরিকদের ‘সন্ত্রাস, বিচ্ছিন্নতাবাদী, অপরাধী, বিদ্রোহী’ নামে অভিহিত করা হয়।
৫. সংগঠন: ভারী আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রায় ছয় লাখ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য এবং পুলিশ কাশ্মীরকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
৬. চড়ষধৎরংধঃরড়হ: প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বিজেপি দল কাশ্মীরে মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণা চালাচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
৭. প্রস্তুতি: ভারতের সেনাবাহিনী কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণ করছে। বিজেপি নেতৃবৃন্দ সেনাবাহিনী কর্তৃক কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণকে চূড়ান্ত সমাধান বলছে।
৮. নিপীড়ণ: কাশ্মীরের নাগরিকদের লক ডাউন করে রাখা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যা করা হচ্ছে।
৯. বিধ্বংস: ১৯৯০ সাল থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মীরে অন্তত ২৫টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। পাশাপাশি পচিশ জনের বেশি মুসলমান বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।
১০. অস্বীকার: কাশ্মীরের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবাদ নিমূলের দাবি করেছে মোদি সরকার। ক্ষমতাসীন বিজেপি কাশ্মীরে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ভারতের সেনাবাহিনীর কোন সদস্য অথবা পুলিশ কর্তৃক কাশ্মীরের কাউকে নির্যাতন, হত্যা অথবা নিহতের চেষ্টার অভিযোগও অস্বীকার করেছে বিজেপি সরকার।
উপরের দশটি কারণে ভিত্তিতে জেনোসাইড ওয়াচ সংগঠন জাতিসংঘ ও এর সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রগুলোকে কাশ্মীরে গণহত্যা থেকে বিরত রাখতে ভারতকে সতর্ক করতে আহ্বান জানিয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়। এ কারণে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল হয়ে যায়। ক্ষমতাসীন মোদি সরকার উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাশ্মীরে কারফিউ জারি করে। কাশ্মীরের স্থানীয় গণমাধ্যমসহ, মোবাইল-ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। কাশ্মীরের প্রকৃত অবস্থা জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্থানীয় তরুণদের সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
পাকিস্তান সরকার কাশ্মীরে গণহত্যা চলছে বলে দাবি করেছে। কাশ্মীরের গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অর্ধেকের বেশি সদস্য মানসিক চাপে
ভারতের ১৩ লাখ সেনা সদস্যের অর্ধেকের বেশিই তীব্র মানসিক চাপে ভুগছে। প্রতিবছর সীমান্তে শত্রুদের বিরুদ্ধে কিংবা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে...
Discussion about this post