মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া::
কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে উখিয়া টেকনাফ সড়কে চলমান সড়ক সম্প্রসারণ উন্নয়ন কাজে ধীরগতি ও ভারী বর্ষণের সময় সড়কে রিজিড টেভমেন্ট (ঢালাই) সড়কের মাঝখানে বিদ্যমান বৈদ্যুতিক খুঁটি সহ জংধরা নিমার্ণ সামগ্রী নিয়ে ব্যাপক
অভিযোগ উঠেছে। উন্নয়ন কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোন প্রকার অনিয়ম, দুর্নিতী ও স্বেচ্ছাচারিতার উর্ধ্বে থেকে উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
যেহেতু যে দুটি প্যাকেজে কাজ চলছে সেগুলো অত্যান্ত জরুরী ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান বিধায় গুনগত মান সম্পন্ন উন্নয়ন কাজ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার লিংক রোড থেকে উখিয়ায় নব নির্মিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জামিল ইকবাল ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে টেকনাফের উনচিপ্রাং পর্যন্ত ২৫
কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সালেহ বাবুল ২০১৮ সালে কার্যাদেশ মোতাবেক কাজ শুরু করেন। প্রথম প্যাকেজের মরিচ্যা কিছু অংশ ও কোটবাজার সহ উখিয়ার আংশিক কাজ সম্পন্ন করে বাকী কাজ টুকু খোড়াখুড়ি করে ফেলে রাখে। দীর্ঘ
সূত্রতার কারণে সড়ক উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় নিমার্ণাধীন সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোটবড় খানা খন্দকে সৃষ্টি হয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে পাশাপাশি সংকুচিত সড়কে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে দিনের অধিকাংশ সময় যানজট লেগে থাকে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ভুক্তভোগীরা
জানিয়েছেন। স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত কয়েকদিন থেকে চলমান সড়কের উন্নয়ন কাজ প্রত্যক্ষ করতে গিয়ে জানা যায়, বৃষ্টির পানির উপর রিজিড টেভমেন্ট (ঢালাই) করা হচ্ছে। কিছু কিছু অংশে জমাট বাধাঁ বৃষ্টির পানি দেখা গেছে। তাছাড়া রিজিড টেভমেন্ট (ঢালাই) এর মধ্যে ভাগে বৈদ্যুতিক খুঁটিও প্রত্যক্ষ করা গেছে।
উখিয়া সদর জীপ মাইক্রো, বাস মিনিবাস মালিক শ্রমিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো জানান, তিনিও একজন ঠিকাদারী কাজ করে থাকেন। যে ধরনের উন্নয়ন কাজ সড়কে চলতেছে তা কোন দিন মান সম্পন্ন হতে পারে না দাবী করে ওই শ্রমিক নেতা বলেন, বৃষ্টিতে সড়কে ঢালাই ও জংধরা নিমার্ণ সামগ্রী যত্রতত্র ফেলা রাখা সিমেন্ট বালি কংক্রিট প্রভৃতি ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও উক্ত উন্নয়ন কাজ কোনদিন টেকসই হতে পারে না এমন অভিযোগ উত্থাপন করতে দেখা গেছে।
যানবাহন শ্রমিক ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার পর মানবতার শহর উখিয়ার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নাগরিক যোগাযোগে দৃশ্যমান উন্নয়ন যোগ করেছে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প।
এক বছর আগেও উখিয়াবাসীর কাছে কক্সবাজার-টেকনাফ শহীদ জাফর আলম আরাকান সড়ক ছিল এক দুঃস্বপ্নের নাম। গেল বছর বৃষ্টির সময়ে কোটবাজারবাসী সড়কে ধানের চারা রোপন করে প্রতিবাদ জানান।
এখন কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক জুড়ে উন্নয়নের কাজ ত্বরান্বিত হচ্ছে
ধীরগতিতে। যদিও উখিয়ায় যানজটে ও খানাখন্দকে পরিপূর্ণ সড়কে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারন করেছে। এরপরেও মানুষ অসহায়ের মতো অপারগ পক্ষে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে।
যানজট নিরসন, স্বস্তিদায়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার নির্মাণকাজ দিনরাত বিরতিহীন ভাবে চলার কথা থাকলেও তা স্বপ্নের শামিল। ব্যস্ত নাগরিক জীবনকে আরও সহজ ও আধুনিকতায় পরিপূর্ণ করতে সরকার কাজ করলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি ও দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে উন্নয়ন বাধঁাগ্রস্থ হচ্ছে।
এব্যাপারে কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নিবার্হী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সড়কে চলমান উন্নয়ন কাজ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তা জলিল আহমদ জানান, বৃষ্টির সময় কাজ না করার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে যেসমস্ত বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে ওইসব খুঁিট অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুতের সাথে চুক্তি হয়েছে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে খুঁটি সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।
Discussion about this post