সমুদ্রকন্ঠ রিপোর্ট ॥
দেশের প্রধান পর্যটনের এই কক্সবাজার শহরজুড়ে ব্যাপক খানাখন্দে ভরা প্রায় সব রাস্তা। পৌর শহরের সড়কগুলো থেকে শুরু করে সরুপথ কিংবা সমুদ্রসৈকতে যাতায়াতের রাস্তাগুলোতেও প্রায় একই অবস্থা বিরাজ করছে। ফুটপাথগুলো খুঁড়ে রাখা হয়েছে। অনেক রাস্তার ওপরেই ভাসছে ড্রেনের নোংরা পানি-আবর্জনা। এমন এক পরিস্থিতি বিরাজ করলেও এ বিষয়ে যেন দেখার কেউ নেই। সরেজমিন গত শুক্রবার কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ও শহর ঘুরে এমনই চিত্র দেখা যায়।
স্থানীয়রা বলেছে, পর্যটন নগরীর অভ্যন্তরীণ রাস্তা, অবকাঠামো ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির বিষয়গুলো কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পৌরসভা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আওতায় তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে উদাসীন রয়েছে কক্সবাজার পৌরসভা ও সড়ক বিভাগ। শহরের অনেক ড্রেন সংস্কার ও পরিবর্ধনের নামে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে মাসের পর মাস ধরে। ফলে এসব রাস্তা আরও বেশি জরাজীর্ণ ও ধুলাময় হয়ে থাকে পুরো এলাকা।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘রাস্তার একপাশে বিটুমিন ফেলা হলেও বর্তমানে সব কাজই বন্ধ আছে এটা সত্য। কারণ কিছুদিন আগেও ধারাবাহিকভাবে অনেক বৃষ্টিপাত হচ্ছিল। তারপর আবার পৌরসভা পয়ঃনিষ্কাশন ও রাস্তার নিচ দিয়ে তার প্রতিস্থাপনসহ বিভিন্ন কাজ করার কথা। আমরা রাস্তার কাজ শেষ করলে আবার কাজের জন্য নতুন করে রাস্তা কাটতে হবে। তখন আবার সমালোচনা হবে। তাই অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এ ছাড়াও সম্প্রতি একটি সমন্বিত সভা হলে সেখানেও রাস্তার কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছে। আমার আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু নানা কারণে কাজ এগোতে দেরি হচ্ছে।’
সরেজমিন কক্সবাজারের সমুদ্র তীরবর্তী হোটেলকেন্দ্রিক লাবণী সড়ক ঘুরে দেখা যায়, ফোর লেনের কাজ শুরু করার জন্য রাস্তার অর্ধেক অংশ কেটে রাখা হয়েছে। সেখানে ইটের খোয়া ও কোথাও কোথাও গর্ত। রাস্তার দুপাশেই প্রশস্ত ড্রেন সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। ময়লা-আবর্জনা আটকে থেকে ড্রেনের পানি অনেক রাস্তায় উপচে ওঠে আশপাশ সয়লাব হয়ে গেছে। রাস্তাসংলগ্ন হোটেল ভবন থেকে শুরু করে প্রতিদিন ভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে ময়লা ড্রেনের ওপর দিয়ে চাটাই বা অস্থায়ী সিঁড়ি রাখতে দেখা যায়। এ ছাড়া লাবণী পয়েন্টের রাস্তা থেকে সুগন্ধা পয়েন্টে যাওয়ার ভেতরের রাস্তাটিও একই দুর্দশায় পড়েছে। কল্লোল রেস্ট হাউসের সামনে থেকে দুদিকের রাস্তা দুটিও খানাখন্দে ভরা ও নোংরা। এর বাইরেও কক্সবাজার শহরের বায়তুশ শফর সড়ক, বইল্লাপাড়া, টেকপাড়া ও কলাতলীর রাস্তাগুলো ঘুরেও খানাখন্দক ও নোংরা পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় দেখা যায়।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারে ঘুরতে যাওয়া পর্যটক সাজ্জাদ মাহমুদ খান জানান, এমন একটি পর্যটনের শহরের রাস্তা ও অবকাঠামোগুলোর দুর্দশা দেখে মনে হচ্ছে এসব দেখার কেউ নেই। প্রতিটি রাস্তা ভাঙা ও গর্ত ভরা। ময়লা পানিতে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে খুবই খারাপ অবস্থা ধারণ করেছে। পর্যটকসহ সাধারণ মানুষের চলাচল করা খুবই কষ্টকর।
সাজ্জাদ বলেন, এখানে বিদেশি পর্যটক প্রচুর আসেন। তারা শহরের এমন অবস্থা দেখলে খুবই খারাপ ধারণা নিয়ে ফিরে যাবেন। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সৈকত ও শহরের সমন্বিত উন্নয়ন জরুরি।
কক্সবাজারের একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলে, কক্সবাজারের এসব রাস্তার দুর্দশা মূলত পৌরসভার উদাসীনতার জন্যই বেশি দায়ী।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান তৎপর হলে,সরেজিমন তদারকি করলে
রাস্তার এমন বেহাল দশা হয়ে থাকতো না এক বছর ধরে। সব মিলিয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও এখন চরম বিপাকে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে গতমাসে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত নম্বরে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করা হয়। কিছু সময় পর লাইন কেটে যায়। এরপর একাধিকবার ফোন করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
বর্ষার আগেই প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ
বর্ষার আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের...
Discussion about this post