সময় ফুরিয়ে আসছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সম্প্রতি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে বিপুল ভোটে হেরে গেছেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখের পর আর প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইটহাউজে থাকার সুযোগ নেই তার। যদিও এখন পর্যন্ত নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেননি তিনি। উল্টো গতকালই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেছেন— “উই উইল উইন”! ট্রাম্প মুখে যা-ই বলুন না কেনো, ক্ষমতা তাকে ছাড়তেই হবে। জোর করে ক্ষমতায় থাকার মতো বিপর্যয় যুক্তরাষ্ট্রে ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম। ক্ষমতা ছাড়ার পর ট্রাম্প কী করবেন, তা নিয়ে নানা রকম জল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে।
ক্ষমতা ছাড়ার পর ট্রাম্প কি মোটিভেশনাল বক্তা হয়ে যাবেন, নাকি স্মৃতিকথা লেখায় মনোযোগ দিবেন, নাকি একটি প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরির কথা ভাবছেন তিনি; এ রকম নানা প্রশ্ন ঘুরছে নানা জনের মনে।
এক দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেমি কার্টার নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন মানবিক দায়িত্ব পালনে, অন্য দিকে জর্জ ডব্লিউ বুশ বেছে নিয়েছেন ছবি আঁকাআঁকি। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প যেহেতু কখনোই তাদের মতো প্রথাগত রাজনীতিক ছিলেন না, তিনি হয়তো অন্য সাবেক প্রেসিডেন্টদের মতো প্রথাগত কিছুও বেছে নিবেন না।
নর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কেলগ স্কুল অব ম্যানেজমেন্টের বিপণন বিষয়ক অধ্যাপক টিম চকিন্স মনে বলেন, “প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড অনেক ইতিহাসই নতুন করে লিখেছেন। সুতরাং এমন কিছু ভাবার কোনো কারণই নেই যে, এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্টদের আমরা যা করতে দেখেছি তিনিও তাই করবেন।”
আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে সামিল হতে পারেন ট্রাম্প
অনেকেই ভেবেছেন এবারের নির্বাচনে হেরে ট্রাম্প রণে ভঙ্গ দিবেন। কিন্তু, বিশ্লেষকরা বলছেন ট্রাম্প আবারও নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুসারে কোনো ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। কিন্তু এই দুইবার যে পরপর দুইবার হতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের একমাত্র প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড চার বছরের বিরতি দিয়ে দুইবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ১৮৮৫ সালে প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপরের মেয়াদে দায়িত্ব পান বেঞ্জামিন হ্যারিসন। ১৮৯৩ সালে গিয়ে আবার ক্ষমতা পান গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড।
সুতরাং ট্রাম্পও এ রকম কিছু করার চেষ্টা করতে পারেন। যারা ভাবছেন এই নির্বাচন হেরে যাওয়ার পর ট্রাম্প তার রাজনৈতিক জীবনের ইতি টানবেন, ট্রাম্প তাদেরকে ভুল প্রমাণ করে আগামী নির্বাচনের প্রার্থীতা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
নিজের ব্যবসায়িক সম্রাজ্যেও ফেরে যেতে পারেন ট্রাম্প
২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় পরিচয় ছিলো একজন রিয়াল এস্টেট মুঘল হিসেবে। নিজ দেশে তো বটেই, ভারত, তুরস্ক, ফিলিপিন্স, দুবাই ও ইন্দোনিশিয়ার মতো দেশে রয়েছে বিপুল সম্পত্তি।
হোটেল ব্যবসার পাশাপাশি তার আছে বেশ কয়েকটি গলফ কোর্স। প্রতি বছর এই সব সম্পত্তির ভাড়া হিসেবে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় হয় তার। ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের মোট সম্পদের পরিমাণ কতো, ট্রাম্প নিজও হয়তো জানেন না। নিজের এই ব্যবসায়িক সম্রাজ্যের দিকে গত চার বছরে তেমন মনোযোগই দিতে পারেননি তিনি। কিন্তু এখন যেহেতু আর রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটি নিয়ে আর মাথাব্যথা থাকছে না, সেহেতু আবারও নিজের সম্রাজ্যে ফিরে যেতে পারেন ট্রাম্প।
মিডিয়া মুঘল হতে পারেন ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন করার আগেও টিভিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দারুণ জনপ্রিয়তা ছিলো। সেই জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে আবারও টিভির দিকে ঝুঁকতে পারেন তিনি। তবে এবার আর রিয়েলিটি শো বা এ রকম কিছু নয়, ট্রাম্প দিতে পারেন নিউজ চ্যানেল। কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলের সাথে যুক্ত হতে পারেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হিসেবে ট্রাম্পের দর্শকসংখ্যা হতে পারে ঈর্ষণীয়। এমনিতেই তিনি হতে যাচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট, তার উপর মানুষকে বিনোদিত করার ইচ্ছাতেও ট্রাম্প অন্য অনেকের চেয়ে এগিয়ে।
মিয়ানমারে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো উইরাথুর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
মিয়ানমারে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো বিতর্কিত বৌদ্ধ ভিক্ষু আশ্বিন উইরাথুর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে...
Discussion about this post