দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। সেই সাথে আবারও বেড়েছে করোনা সুরক্ষা পণ্যের চাহিদা। বিশেষ করে মাস্কের চাহিদা বেড়েছে বেশি। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি অসাধু চক্র নকল মাস্ক উৎপাদন করছে। বিভিন্ন ব্যবসায়ী এই মাস্ক উৎপাদন কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। আর তাই প্রতিদিনই বাড়ছে নকল মাস্কের উৎপাদন।
শনিবার (২১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকার জে এম সেন হলের সামনে দেখা গেছে, পলিথিন ভর্তি করে ভ্যান গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নকল মাস্ক। ভ্যানওয়ালা জানান, এসব মাস্ক খলিফাপট্টির বড় সেলিমের কারখানা থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রিয়াজউদ্দিন বাজারে। তিনি এর বাইরে আর কিছু বলতে অপরাগতা জানান।
ভ্যানওয়ালার দেয়া তথ্য মতে, রিয়াজউদ্দিন বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা মিললো এসব নকল মাস্ক ভাসমান দোকান থেকে শুরু করে মার্কেটের দোকানদারও সাজিয়ে রেখেছে। পলিথিন ভর্তি এসকল মাস্ক খালি হাতে সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া নান্দনিক বক্সে নিয়ে তার দাম হাকা হচ্ছে ১২০ টাকা। পাইকারি মার্কেটে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব মাস্ক। এক বক্স সার্জিক্যাল মাস্কের আগে দাম ছিল ৫৫ টাকা। বর্তমানে সে মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। খুচরায় একটি মাস্ক ৫ টাকা করে বিক্রি হতো কিন্তু এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।
ক্রেতাদের প্রশ্ন, বাজারের এসব পলিথিনে রাখা খোলা সার্জিক্যাল মাস্ক বক্সে ঢুকিয়ে কতটা করোনা সুরক্ষা দিতে পারবে? আবার একই বক্সে মিলছে ৪ থেকে ৫ প্রকারের নকল মাস্ক। যা অশনিসংকেত দিচ্ছে জনমনে।
এদিকে নগরীতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসন থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাও করছেন। বাইরে বের হলেই মুখে মাস্ক পরে বের হওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে। অর্থদণ্ড দেওয়া হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার না করা ব্যক্তিদের।
এসব অপকর্মের জন্য প্রশাসনের কিংকর্তব্যবিমুঢ় হওয়াকে দায় করছেন সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ বলছে, শুধু রাস্তায় নেমে জরিমানা করলে হবে না। বাজারে নকল মাস্ক যারা বিক্রি করছে তাদের দোকানে অভিযান পরিচালনা করার পরামর্শ দিচ্ছে ভুক্তভোগীরা।
করোনা সংক্রমণ খুব দ্রুত বাড়তে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সাধারণ মানুষ টাকা দিয়ে বাজার থেকে দ্বিগুণ দামে সার্জিক্যাল নামক নকল মাস্ক কিনছে। এসব নকল মাস্কে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পারবে না, তেমনি প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এ ভুলের মাশুল হিসেবে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ দিতে হবে।
ফলে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহারে সচেতন হচ্ছে। এই সুযোগে মাস্কের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এক শ্রেণির আসাধু ব্যবসায়ী। হাতিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের টাকা। দ্বিগুণ হারে বেড়েছে মাস্কের দাম।
খুচরা ব্যবসায়ী জালাল উদ্দীন মাস্ক কিনতে এসে চোখ তুলেছে কপালে। তিনি বলেন, ‘গত ১০ দিন আগে নিয়ে যাওয়া ৫৫ টাকা দামের মাস্ক আজকে ১২০ টাকা। তার ওপর পাচ্ছি সব দু’নম্বর মাস্ক। আগে যে মাস্ক ৫ টাকায় বিক্রি করতাম, এখন তা ১০ টাকায় বিক্রয় করতে হবে। ক্রেতারা কি এ চড়া দামে খারাপ মানের মাস্ক নিবে?’
বাজার ছেয়ে গেছে নকল মাস্কে- এমনটা বলেছেন রিয়াদুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা। তিনি বলেন, ‘সার্জিক্যাল মাস্ক কিনলাম ১২০ টাকায়। কিন্তু এ মাস্ক করোনা সংক্রমণ রোধে কার্যকর হবে কিনা জানি না। একই বক্সে ৪ বার পরিবর্তন করে আশানুরূপ মাস্ক পেলাম। কেউ বলছে, তাদের মাস্ক ঢাকা থেকে আনা হয়েছে। আর কেউ বলছে, বাইরে থেকে আমদানি করেছে। কিন্তু মাস্কের গুণগত মান দেখে মনে হচ্ছে না এসব মাস্ক করোনা ঠেকাতে পারবে। প্রশাসন এ ব্যপারে কিংকর্তব্যবিমুঢ়। শুধু রাস্তায় নেমে জরিমানা করলে তো হবে না। বাজারে নকল মাস্ক যারা বিক্রি করছে তাদের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা দরকার।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাব’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘নামহীন নকল মাস্কে বাজার ভর্তি আছে। মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যাপারে নীতিমালা করার কথা থাকলেও তা এখনও হয়নি। স্যানিটাইজারের নীতিমালা প্রণয়ন করবে ঔষধ প্রশাসন ও মাস্কের ব্যপারটা দেখবে বিএসটিআই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে অতি প্রয়োজনীয় পণ্যকে ব্যবসার হাতিয়ার বানায়। কিছুদিন পর অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন ঔষধ তাদের ব্যবসায়িক পণ্য হবে। তবে এ ব্যাপারে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন প্রয়োজন।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘করোনা সংক্রমণে বাজারের মাস্কগুলো কতটুকু কার্যকর হবে তা আমরা বিশেষজ্ঞদের সাথে সমন্বয় করে দেখবো। নকল মাস্ক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো খুঁজে বের করা হবে। অতি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আমার অভিযান পরিচালনা করবো। নিম্নমানের মাস্ক যারা বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।’
At Nifty, we give every applicant a reasonable go at locating the loan you may need, bad credit and all sorts of.
At Nifty, we give every applicant a reasonable go at locating the loan you may need, bad credit and all...
Discussion about this post