দীর্ঘায়িত হতে থাকা রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে একটি প্রস্তাবনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে আবারও বিপুল ভোটে চতুর্থবারের মতো গৃহিত হয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার বরাত দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাবাব ফাতিমা “মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালগু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি” শীর্ষক জাতিসংঘ প্রস্তাবটি ধারাবাহিকভাবে সমর্থনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে গতকাল ১৮ নভেম্বর বিপুল ভোটে চতুর্থবারের মতো প্রস্তাবটি গৃহিত হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাবাব ফাতিমা বলেছেন, ‘এক মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে এ সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজছে, যা নিহত রয়েছে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের মধ্যে।’
রোহিঙ্গা সংকটের জরুরি সমাধানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান প্রস্তাবটিকে জোরদার করবে এবং যে সংকটের শিকড় সম্পূর্ণভাবে মিয়ানমারেই নিহিত বলেও জানান রাবাব ফাতিমা।
তিনি বলেন, ‘ওআইসি ও ইউরোপিয় ইউনিয়ন যৌথভাবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করে, যাতে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে ১০৪টি দেশ। এটি মিয়ানমার মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ অন্যান্য সহিংসতার শিকার নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিম ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বিপুল সংখ্যক জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রের শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ও অকুণ্ঠ সমর্থনেরই বহিঃপ্রকাশ।’
এই জাতিসংঘ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৩২টি দেশ, বিপক্ষে দেয় ৯টি দেশ ও ৩১টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে।
ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও ওআইসির সদস্য রাষ্ট্র ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুজারল্যান্ডসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আন্তঃআঞ্চলিক জোটের সমর্থন ও সহ-পৃষ্ঠপোষকতা পায় প্রস্তাবটি।
রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা আরও বলেন, ‘এবারের প্রস্তাবটিতে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের সাময়িক আদেশ, আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের তদন্ত শুরুর বিষয় ও রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে বঞ্চিত করার মতো নতুন বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে।’
প্রস্তাবে মিয়ানমারকে যেসব সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানানো হয়েছে সেগুলোর মধ্যে- রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদানসহ সমস্যাটির মূল কারণ খুঁজে বের করা, প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা, প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির পদক্ষেপ হিসেবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
প্রস্তাবটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা ও আশ্রয়দানের ক্ষেত্রে যে অনুকরণীয় মানবিক দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।
বর্ষার আগেই প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ
বর্ষার আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের...
Discussion about this post