দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি হ্যান্ডবুক প্রকাশ করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের আর্কষণীয় সব ছবি, যা দেখলেই এক দৃষ্টিতেই মন চাইবে ঘুরতে। তবে তালগোল পাকিয়েছে বর্ণনায়। আসলে যে জায়গার ছবি, তার বিবরণ না দিয়ে লেখা হয়েছে অন্য স্থানের তথ্য। যাদের দায়িত্ব সঠিক তথ্য উপস্থাপনের, তারাই ছড়াচ্ছেন ভুলে ভরা হ্যান্ডবুক।
পান্থুমাই এর ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে জায়গাটি বিছানাকান্দি
হ্যান্ডবুকটিতে আমিয়াখুমের একটি ঝর্ণার ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে নাফাকুম জলপ্রপাত। বান্দরবানের নীলগিরির ছবি থাকলেও জায়গার নাম হ্যান্ডবুকে দেওয়া খাগড়াছড়ি। হামহাম যাওয়ার পথের একটি দিয়ে জায়গার বিবরণ দেওয়া লাউয়াছড়া রেইন ফরেস্ট। পান্থুমাই এর ছবি দিয়ে জায়গার নাম বলা হচ্ছে জাফলং। একই পান্থুমাই এর ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে জায়গাটি বিছানাকান্দি। বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে এটি মহেশখালী।
একই পান্থুমাই এর ছবি দিয়ে জায়গার নাম বলা হচ্ছে জাফলং
এমনকি হ্যান্ডবুকে ব্যবহৃত ছবির কপিরাইট নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মো. রহিমউদ্দিন রনি দাবি করছেন পান্থুমাইয়ের তার তোলা ছবি ব্যবহার করা হয়েছে কোনও রকম অনুমতি ছাড়াই।
সেন্টমার্টিনের ছবিতে লেখা হয়েছে মহেশখালী
ইতোমধ্যে সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে ভুলে ধরা হ্যান্ডবুকটি। পযর্টকরা এমন ভুলের জন্য দুষছেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডকে।
বান্দরবানের নীলগিরির ছবি থাকলেও জায়গার নাম হ্যান্ড বুকে দেওয়া খাগড়াছড়ি
ফয়সাল আহমেদ একজন পর্যটক। তিনি মনে করেন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প ধ্বংস করার জন্য বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডই যথেষ্ট। তিনি বলেন, ‘এক কথায় বললে এই ম্যাগাজিন দেখার পর মনে হচ্ছে এটা হাস্যকর বিভ্রান্তি। এই ধরনের একটা ম্যাগাজিন যেটা বিদেশিদের কাছে দেশকে রিপ্রেজেন্ট করছে, এক্ষেত্রে ট্যুরিজম বোর্ডের আরও সর্তক থাকা উচিত ছিল। তাদের এই কর্মকাণ্ডে দেশের পুরো ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি হতাশ।’
হামহাম যাওয়ার পথের একটি দিয়ে জায়গার বিবরণ দেওয়া লাউয়াছড়া রেইন ফরেস্ট
জানা গেছে, টেন্ডারের মাধ্যমে এ হ্যান্ডবুকটি প্রকাশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গুড লাক প্রিন্টার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। তাদের মুদ্রণ শেষে বিলি করা শুরু করেছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।
আমিয়াখুমের একটি ঝর্ণার ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে নাফাকুম জলপ্রপাত
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক) মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডারের মাধ্যমে হ্যান্ডবুক প্রকাশ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। যাবতীয় কাজ তাদের করা। ইতোমধ্যে হ্যান্ডবুকে ভুল নিয়ে আলোচনা শুনেছি। বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।’
Discussion about this post