*সম্পাদকীয়*
সাংবাদিকতা ও গুজব
একসময় তথ্য বা খবর জানার একমাত্র উৎস ছিল গণমাধ্যম। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া রূপান্তর ও বিকশিত হয়েছে। স্মার্ট ফোন ও আই ফোনের বদৌলতে তথ্য ও খবর এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, গুগলসহ অত্যাধুনিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণ তাৎক্ষণিকভাবে সবকিছু পেয়ে যাচ্ছে। সামাজিক মাধ্যম ক্রমেই যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে সাংবাদিকতা, অথবা সাংবাদিকতায় সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার, যেভাবেই বলা হোক না কেন, বর্তমান সময়ের সাংবাদিকতায় যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো খুব বেশিই সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে, তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগই নেই। তবে নেতিবাচক ভাবে না দেখে একে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগানোর পক্ষেই গবেষকরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে যেমন উপকারিতা আছে, তেমনি রয়েছে ভোগান্তিও।
গুজবের অনেক ঘটনা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশি ঘটছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে স্ট্যাটাস, কমেন্ট ও ব্যক্তিগত বার্তার মাধ্যমে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বহুসংখ্যক মানুষ। ফেক নিউজ সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই বেশি ছড়ায়। এর ফলে ব্যক্তি তথা সমাজের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক নিউজের বিষয়ে সতর্ক হওয়া অত্যন্ত জরুরি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক নিউজ আমাদের দেশের জন্য একটি আতংক। একটি ফেক নিউজকে কেন্দ্র করে মারামারি ও হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে আমাদের দেশে। ‘ফেক নিউজের উপদ্রব অনেক আগে থেকেই ছিল। তবে এখন ইন্টারনেট ভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর জনপ্রিয়তার কারণে এগুলো সমাজকে বেশি প্রভাবিত করছে। শুধু অনলাইনেই নয়, প্রিন্টেও আজকাল এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
বর্তমানে মিডিয়াতে গুজব এবং হলুদ সাংবাদিকতা একাকার হয়ে সত্যের আবরণে প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
অনেক গুজব ও মিথ্যা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। বহুল এই প্রচারের জন্য তাদের চাহিদাও বেড়েছে এবং চরম উন্মাদনার সৃষ্টি হচ্ছে। অস্থিরতা নির্ভর সমাজ ব্যবস্থায় ঝাঁকুনি দিয়ে সব তছনছ করে দিচ্ছে।
অনলাইন ভিত্তিক বহুল প্রচারিত ও প্রচলিত সংবাদপত্রগুলি এমনকি অনুমোদনবিহীন নিউজ পোর্টালগুলি মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছে, যার সত্যতা এবং বাস্তবতা কোনটিই খুঁজে পাওয়া যায় না।
কিন্তু এই মিথ্যা ভাইরাসগুলো সমাজে জায়গা করে নিচ্ছে সত্য হিসেবে বা মানুষের মনে সন্দেহের দোদুল্যমান অবস্থান হিসেবে।
*কোনটা সঠিক নিউজ আর কোনটা ফেক নিউজ ? *
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার হাজার নিউজ দেখি আমরা। এগুলো থেকে কীভাবে বুঝতে পারব কোনটা সঠিক নিউজ আর কোনটা ফেক নিউজ?
* ‘ফেক নিউজ চেনার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ্য করলে ফেক নিউজ চিহ্নিত করা সম্ভব। বিষয়গুলো হলো সাধারণত ফেক নিউজগুলোর হেডলাইনটা একটু চাঞ্চল্যকর হয়ে থাকে। অনেক সময়েই ঐ শিরোনামের সঙ্গে বিষয়বস্তুর সামঞ্জস্য থাকে না অথবা ভুল তথ্য দিয়ে সাজানো থাকে। শুধু তা-ই নয়, যে সাইটগুলো থেকে ঐ নিউজগুলো পাবলিশ করা হয়, সেগুলোকে দেখলেই আনপ্রফেশনাল সাইট মনে হবে। নিউজের ভাষায় এটিকে স্টান্টবাজিও বলে কেউ কেউ।’
* অনেক সময় এমন কিছু নিউজ দেখা যায় যেগুলো একতরফা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সম্পাদিত। এমন নিউজও ফেক নিউজের আওতাভুক্ত। আবার কখনো কখনো দেখা যায়, কোনো পুরোনো নিউজকে ফলো করে, কাটছাঁট করে নিউজ সম্পাদনা করা হয়। এক্ষেত্রে নিউজে ব্যবহৃত ছবি ফটোশপ বা নিজের ইচ্ছামতো এডিট করে ছবি তৈরি করা হয়। দ্রুত যে নিউজগুলো ভাইরাল হয়, সেগুলোর বেশির ভাগই ফেক নিউজ। দ্রুত ভাইরাল হওয়া নিউজগুলোতে সতর্কতা আরো জরুরি।
ফেক নিউজ কেন করা হয় এবং কাদের নিয়ে ও কাদেরকে টার্গেট করে করা হয়?
* ফেক নিউজ সাধারণত, রাজনীতিবিদ, বড়ো ব্যবসায়ী, তারকা ও খ্যাতিমান ব্যক্তি ও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে হয়ে থাকে। যারা এ নিউজগুলো করেন, তারা জানেন দ্রুত ভাইরাল করতে হলে এ বিষয়গুলোর আশ্রয় নিতে হবে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে থাকে। এদের বিভিন্ন পেজ থাকে যেগুলোতে লাইক বা শেয়ায়ের ভিত্তিতে তাদের অর্থ উপার্জন হয়। এছাড়াও, একদল সুবিধাভোগী ফেক নিউজ ছড়িয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিল করে। বিশেষ করে রাজনৈতিক বিষয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে অথবা সরকারের সাফল্যকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে তা ভাইরাল করেও ফায়দা লুটে কেউ কেউ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজ ছড়ানোতে ইন্টারনেট হলো সবচেয়ে দ্রুততম বাহন। এর ওপর ভর করেই সর্বস্তরের জনগণের কাছে নিমিষেই পৌঁছে যায় নিউজগুলো। ৫৫.৫ শতাংশ শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিতে তারা ইন্টারনেটে নিরাপদ নয়। ফেক নিউজ ও প্রোপাগান্ডার জন্য ইন্টারনেটই দায়ী।
-সূত্রঃ ইন্টারনেট।
*সাংবাদিকতা কি? সাংবাদিকতা কেনো?*
মঈনুল হাসান পলাশ ॥
সাংবাদিকতা হল বিভিন্ন ঘটনাবলী, বিষয়, ধারণা, ও মানুষ সম্পর্কিত প্রতিবেদন তৈরি ও পরিবেশন, যা উক্ত দিনের প্রধান সংবাদ এবং তা সমাজে প্রভাব বিস্তার করে।
সাংবাদিকতা শব্দটি দিয়ে তথ্য সংগ্রহের কৌশল ও সাহিত্যিক উপায় অবলম্বনকে বোঝায়।
সাংবাদিকতার মানেই হচ্ছে মানুষকে নতুন কিছু বলা, এমন কিছু বলা যেটা তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে, তাদের ধরে রাখবে। সকল সাংবাদিক দুশ্চিন্তায় থাকে তাদের কাজ কতটুকু মৌলিক বা অরিজিনাল হচ্ছে, তা নিয়ে। কোথা থেকে পরবর্তী অরিজিনাল স্টোরি আসবে, তা নিয়ে। মৌলিক সাংবাদিকতার জন্য বিশেষ নৈপুণ্য দরকার।
সাংবাদিকতার জন্য প্রয়োজন প্রচন্ড কৌতুহলী মন। কিছু জানার ইচ্ছা দিয়েই স্টোরি খোঁজার কাজ শুরু হয়।
আর এখান থেকেই শুরু হয় সাংবাদিকতা। তাহলে আমার কৌতূহলী মনকে কীভাবে জাগাবো?
এমন একটি মনোভাব তৈরি করতে হবে, যার ফলে ‘কেন এরকম হলো’, বা ‘এখানে আসলে কী হচ্ছে’ ইত্যাদি প্রশ্ন চিন্তাজগতে ঘুরপাক খাবে।
যা দেখা হলো বা শুনা গেলো বা পড়ার সুযোগ হলো, সেটা দিয়ে যেসব প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায় নি, সেসব প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য হবে।
একজন সাংবাদিক কী ধরনের কাজ করেন?
প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী একজন সাংবাদিকের কাজের ধরন আলাদা হয়।
তবে যেকোন মাধ্যমে সাধারণ কিছু কাজ রয়েছে। যেমনঃ
* সংবাদ সংগ্রহ করা;
* সংবাদের সত্যতা যাচাই করা;
* সংবাদ সম্পাদনা করা;
* প্রয়োজনে মানুষের সাক্ষাৎকার নেয়া;
* বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করা;
* কলাম লেখা ও বাছাই করা;
* তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করা;
* প্রয়োজনীয় ছবি সংগ্রহ করা।
যেহেতু সাধারণ মানুষের জীবনে গণমাধ্যমের সরাসরি প্রভাব রয়েছে, সেহেতু বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা একজন সাংবাদিকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এছাড়া সংবেদনশীল খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে তথ্যদাতার গোপনীয়তা রক্ষা করা বাঞ্ছনীয়।
একজন সাংবাদিকের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?
১. ভাষাগত দক্ষতাঃ বাংলা ও ইংরেজি – দুই ভাষাতে ভালো দখল থাকা জরুরি।
২. অনুসন্ধানী মনোভাবঃ কোন কিছুর ব্যাপারে অনুসন্ধান করে তথ্য সংগ্রহের মানসিকতা থাকতে হবে।
৩. যোগাযোগের দক্ষতাঃ বিভিন্ন স্তরের মানুষের সাথে যোগাযোগের অভ্যাস থাকা প্রয়োজন।
৪.উপস্থাপনার জ্ঞানঃ পাঠক বা দর্শক-শ্রোতার কাছে খবর উপস্থাপন করার ব্যাপারে জ্ঞান থাকতে হবে।
৫. লেখালেখির দক্ষতাঃ বিভিন্ন ধরনের লেখালেখিতে অভ্যস্ত থাকা জরুরি এ পেশায়।
৬. বিশ্লেষণী ক্ষমতাঃ কিছু ক্ষেত্রে শুধু তথ্য-উপাত্তের উপর নির্ভর না করে লেখায় বা সংবাদে যৌক্তিক চিন্তার প্রকাশ ঘটানো প্রয়োজন।
* কারিগরি কিছু জ্ঞান থাকলে আপনি অন্য অনেকের চেয়ে এগিয়ে থাকতে পারবেন। যেমন, ফটোশপ বা ইলাস্ট্রেটরের প্রাথমিক ব্যবহার শিখে রাখলে তা কাজে দেবে। এর বাইরে ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে যুক্ত থাকলে আপনার কাজ অনেক সহজ হয়ে আসবে।
* আগে থেকে নিজের পছন্দের বিষয়ে ঠিকভাবে জানা উচিত।
যেমন, ক্রীড়া সাংবাদিক হতে চাইলে খেলাধুলা বিষয়ক বই, ম্যাগাজিন ও ওয়েবসাইট থেকে আপডেট নেবার অভ্যাস থাকা কাজে দেবে।
উল্লেখযোগ্য এবং প্রাসঙ্গিক মতামত প্রচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের সম্পাদকের। এর মানে হচ্ছে, বিভিন্ন মতামতের তুলনামূলক গুরুত্ব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া, যাতে সংখ্যালঘু মতামতকে সংখ্যাগুরু মতামত হিসেবে অনুষ্ঠানে না প্রচার করা হয়। সম্পাদকের আরো দায়িত্ব হচ্ছে নিরপেক্ষতা নিয়ে দীর্ঘ-মেয়াদী সমস্যাগুলো যাতে না হয় সেটা নিশ্চিত করা।
ফেইসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ নানান ধরনের সোশ্যাল সাইটে আমাদের পদচারণা চোখের পড়ার মতো। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একজন মানুষের প্রতিফলন স্বরূপ। বর্তমানে অনেক চাকরির আবেদনে সিভির পরিবর্তে চাওয়া হয় সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেরর খুঁটিনাটি। এমনকি বর্তমানে মার্কিন ভিসা পেতে চাইলেও দিতে হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলে ব্যবহারকারীর ভোগান্তির শেষ থাকে না।
এতে সামাজিকভাবে হেয় হবার পাশাপাশি থাকে সংবেদনশীল তথ্য চুরির ভয়।
*সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে*
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে যেমন উপকারিতা আছে, তেমনি রয়েছে ভোগান্তিও। গুজবের অনেক ঘটনা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশি ঘটছে। আর অ্যাকাউন্টটি যদি হ্যাক হয়ে যায় তাহলে ভোগান্তির শেষ নেই। তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগের যেকোনো মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কোনটি গুজব আর কোনটি সত্য তা বোঝার পাশাপাশি অ্যাকাউন্টটি যাতে নিরাপদ থাকে সেই বিষয়েও সাবধানতা অবলম্বন করার কথা বলছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের জন্য হ্যাকাররা ‘প্রোগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং’ ব্যবহার করেন। কেউ যদি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কারো ক্ষতি করতে চায়, তাহলে সেই অ্যাকাউন্টে ওই ব্যক্তি নিজেও পাসওয়ার্ড দিয়ে ঢুকতে পারবেন না। এক্ষেত্রে কী করণীয়? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে তথ্য একজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ বলেন, অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে প্রথমেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়া বন্ধু বা পরিবারের কারো অ্যাকাউন্ট থেকে জানাতে হবে যে আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়েছে। যেসব পোস্ট বা ছবি শেয়ার করা হচ্ছে, সেগুলো আপনি করছেন না।অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। দুই ধাপে পাসওয়ার্ড ভেরিফাই করা যায় এমন ব্যবস্থার কথা জানান তিনি। অপরিচিত ইমেইল লিংক এড়িয়ে চলার বিষয়ে সজাগ থাকা, সফটওয়্যার ও অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।
এছাড়া ডিভাইস নিরাপদ রাখতে সেটিংস অপশনে প্রয়োজনীয় কিছু পরিবর্তন করা যেতে পারে বলেও জানান তিনি। কোন ছবি বা পোস্ট ব্যবহারকারীর অনুমতি না নিয়ে কেউ যাতে ট্যাগ না করতে পারে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার জন্য তেমন অপশনও চালু করা যেতে পারে। (সংকলিত)
*শিশু-কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপত্তা বাড়াতে করনীয়*
সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হল এক ধরনের প্রযুক্তি যা ভার্চুয়াল সম্প্রদায় এবং নেটওয়ার্কগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য, কর্মজীবনের বিভিন্ন তথ্য ও ধারণা, ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের মত প্রকাশ ও বিভিন্ন তথ্য ভাগাভাগি(ংযধৎব) করতে সাহায্য করে।
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাইবার নিরাপত্তা যদি নমনীয় থাকে তাহলে সাইবার অপরাধীরা এর অপব্যবহার করে ব্যক্তি / প্রতিষ্ঠান এর অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করতে পারে।
বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর ব্যবহারকারীদের বড় একটি অংশ বয়সে কিশোর- কিশোরী যারা “ অল্প সময়ে কিছু একটা করে দেখানোর মনোভাব নিয়ে থাকে” ফলে অনেক সময় সাইবার অপরাধীদের ফাঁদে পড়ে অপরিসীম ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে যা অনেক সময় জীবনের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অনেক সামাজিক নেটওয়ার্কের অ্যাকাউন্ট সৃষ্টিক করতে হলে নির্দিষ্ট বয়সের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই নিয়ম কে সম্মান করতে হবে, নির্দিষ্ট একটি বয়স না হলে, এই ধরনের সামাজিক নেটওয়ার্কের অ্যাকাউন্ট সৃষ্টি করা ঠিক হবে না এবং উচিত নয়। এই ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরদের অভিভাবকগন প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করতে পারেন।
অনেক সময় সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীরা শিশুদের বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে থাকেন। এই ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যে শেয়ার করা ছবি যাতে ব্যবহারকারীর অতি ঘনিষ্ঠ ও পরিচিত মানুষের মাঝে হয়।
যদি পাবলিক শেয়ার হয় বা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়, অনেক ক্ষেত্রে শিশুনিগ্রহকারিরা এই ছবি চুরি করে তাদের বিভিন্ন অপকর্মে ব্যবহার করতে পারে।
শিশুদের ছবি শেয়ার করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া উচিত।
যদি কোন শিশু-কিশোরদের সামাজিক নেটওয়োর্কের অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে, অধিকাংশ সময় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সেটিংস্, প্রোফাইল ডিফল্ট থাকে যা হয়ত সবার জন্য উন্মুক্ত, এই ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরদের অভিভাবকদের উচিত হবে সেই অ্যাকাউন্টের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সেটিংস্, প্রোফাইলে যাতে সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা থাকে তার বাবস্থা করা।
অনেক সময় শিশু-কিশোরদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানের সামাজিক মিডিয়া কার্যকলাপ চেক করতে পারেন বা “অনুসরণ” করতে পারেন, যাতে করে তাদের সন্তানকে সামজিক ও নৈতিকতা বোধ শিক্ষা দেয়া যায়, যাতে করে, শিশু, কিশোর-কিশোরীদের বুঝতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয়।
*শেডের উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব এবং মিথ্যা তথ্য সম্বলিত সংবাদের কুপ্রভাব সম্পর্কিত ওরিয়েন্টেশন সম্পন্ন*
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ॥
সোসাইটি ফর হেলথ এক্সটেনশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট(শেড) এর উদ্যোগে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানবিক সহায়তা প্রকল্পের অংশ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহে গুজব এবং মিথ্যা তথ্য সম্বলিত সংবাদ প্রচারে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রভাব সম্পর্কিত ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার (০৯ ডিসেম্বর)উখিয়ায় এনজিও সংস্থা ‘পালস বাংলাদেশ’র অফিসে দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন এনজিও শেড’র ডেপুটি ডিরেক্টর মোঃ শওকত আলী, প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকতার বিভিন্ন ধরন ইতিবাচক, নেতিবাচক দিক ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন কক্সবাজার সিটি কলেজের ট্যুরিজম বিভাগের অধ্যাপক, দৈনিক সমুদ্রকন্ঠ সম্পাদক মঈনুল হাসান পলাশ, সহযোগী প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার রোধে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সঞ্জুর মোরশেদ, শেড’র ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার, মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে উখিয়া প্রেসক্লাব সভাপতি এসএম আনোয়ার হোসেন, উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি শফিক আজাদ, শেড’র প্রজেক্ট ম্যানেজার সাইফুদ্দিনসহ শেড’র সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
সৌজন্যে:
কক্সবাজার জেলার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ব্র্যাক-শেড যৌথ সহায়তা কার্যক্রম
স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা (এইচ আর এইচ সি) প্রকল্প
Discussion about this post