মামলা, সাজা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে একযুগের বেশি সময় আত্মগোপনে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব ও দলটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আবুল হারিছ চৌধুরী। তাঁর আত্মগোপনে থাকা নিয়ে সব সময়ই মুখ বন্ধ ছিলো পরিবারের। আর এ কারণে নানা ধরনের রটনাও ছিলো দেশজুড়ে। হারিছ চৌধুরী ভারত হয়ে লন্ডনে পালিয়েছেন-এ রটনা ছিলো সবচেয়ে বেশি জোরালো। সব কিছু মিথ্যা প্রমাণিত হয় গণমাধ্যমের কল্যাণে। মৃত্যুর প্রায় ৫ মাস পর প্রকাশ্যে আসল করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় মারা যান তিনি। ঢাকার অদূরে সাভারে এক মাদ্রাসায় মাহমুদুর রহমান নামে তাকে সমাহিত করা হয়েছে।
গণমাধ্যম ও পরিবার সূত্রে বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে স্থানীয়রা। তবে প্রশাসনিকভাবে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা না হওয়ায় অজানা আতঙ্ক কাজ করছে দলীয় নেতাকর্মী ও স্বজনদের মধ্যে। হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাঁর মরদেহটি পৈতৃক নির্বাস সিলেটের কানাইঘাটে আনার দাবি জানিয়েছেন। তবে তিনি কিভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁর শূন্যতা আগামী দিনে দলটি কিভাবে পুরণ করবে সেসব বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটে আছেন দলটির স্থানীয় ঊর্ধ্বতন নেতাকর্মীরা।
এদিকে, হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর গ্রামের বাড়ি কানাইঘাটসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে থাকা তাঁর স্বজনরা গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন।
পুলিশি হয়রানিসহ নানা প্রকাশ প্রশাসনিক জটিলতায় পড়ার আশঙ্কায় এ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলছেন না স্বজনরা। হারিছ চৌধুরীর সাথে পালিয়ে থাকার সময় প্রায় যোগাযোগ হতো চাচাত ভাই, কানাইঘাটের সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর। তিনিও অসুস্থতার কথা বলে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
এদিকে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুতে কানাইঘাট উপজেলার সাধারণ মানুষ শোকাহত। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক হারিছ চৌধুরীর মরদেহ এলাকায় এনে পুনরায় জানাজা ও দাফনের দাবি জানান।
অপরদিকে কানাইঘাট পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেছেন, হারিছ চৌধুরী দলমতের ঊর্ধ্বে থেকে এলাকায় উন্নয়নে কাজ করেছেন, তাঁর মধ্যে কখনো প্রতিহিংসা ছিলো না। এলাকায় তার দাফন না হওয়ায় তিনিও ব্যথিত। তবে তিনি আত্মগোপনে দেশেই ছিলেন, এটা দলীয় কোনো নেতাকর্মীরাও জানতো না।
Leave a Reply