শাহী কামরান:: কক্সবাজার জেলার ঈদঁগাহ উপজেলার আলোচিত তিনজন নানা অপরাধের সাথে জড়িত আসামি কে আটক করেছে র্যাব। জড়িত শরীফ কোম্পানী ও ডাকাত ফিরোজ এবং নুরুল ইসলাম নামে তাদের সহযোগী সহ ৩জন কে আটক করে অস্ত্র উদ্ধার করে র্যাব ১৫।
আজ ২৬ই মার্চ র্যাপিড এ্যাকশান ব্যাটালিয়ন কক্সবাজারের প্রধান লেফট্যানেন্ট কর্ণেল খাইরুল ইসলাম আনুষ্টানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিম্নে পাঠকের সুবিধার্তে বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরা হল…….
গত ১৪ মার্চ ২২ ইং কক্সবাজার আদালত পাড়া হতে এক ভদ্র মহিলা কে তু্লে নিয়ে কতিপয় সন্ত্রাসীগণ পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। পর্বর্তী উল্লেখিত স্থান হতে বাংলাদেশ পুলিশ ভিকটিম কে উদ্ধার করেন। কক্সবাজার সদর থানায় ভিকটিম একটি মামলা রুজু করেন। সে মামলায় 4 জনের নাম উল্লেখ করে এবং অপরাপর চার-পাঁচজন অজ্ঞাত নামা উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার পর থেকে রেব ১৫ এর ছায়া তদন্ত শুরু হয়। এবং তদন্ত চলাকালীন সময়ে এই মামলার যে আসামি শরীফ প্রকাশ শরীফ কোম্পানি, ফিরোজ, মুস্তাক ডাকাত তাদের কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য আমাদের কাছে আসে। এই মামলার আসামি শরীফ তার ট্র্যাক রেকর্ড দেখা যায় সে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতি বিবেচনা করে অত্যন্ত সুকৌশলে বারংবার তার রাজনৈতিক মতাদর্শ পরিবর্তন করেন। পরিবর্তন করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছেন। ২০১৪ সালের ১২ ই নভেম্বর ইসলামপুর ইউনিয়নের বটতলীতে অবস্থিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিস দখল করে। সেই অফিসে থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে। এবং পরবর্তী এ সংক্রান্ত মামলায় সে আসামি হয়। তার অপকর্মের ব্যাপারে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়,জেলাপ্রশাসক ও উপজেলা পযার্য়ে স্থানীয় লিখিত অভিযোগ করেছে। সম্প্রতি তার কণ্ঠের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যে অডিওতে সে স্বীকার করে সে একটি বাহিনী লালন পালন করে। এছাড়াও তার বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে।
এবার আসা যাক গ্রেফতারকৃত আসামি ফিরোজ প্রকাশ মুস্তাক ডাকাত। সে ছিল মূলত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একজন প্রসিদ্ধ ঢাকাত। একজন কুখ্যাত ডাকাত সর্দার। ইতিপূর্বে সে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১০০ টির মতো ডাকাতি সংঘটিত করেছে। ১৯৯৬ সালে সে গোমাতলী হাফেজ মিয়ারর গুনা দখল বেদখল নিয়ে ১ বছর যাবত একাধিক হত্যা, হত্যা চেষ্টা ও অস্ত্র মামলার আসামি। ১৯৯৭ সালে খুটাখালী বাজারে ডাকাতিকালে স্থানীয় জনতার হাতে গণধোলাই পর অস্ত্রসহ পুলিশে সোপর্দ করা হয়। হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়ে ১২ বছর জেল খেটে আপিল করে জামিনে মুক্ত হয়ে ২০০৮ সালে ফিরোজ আহমেদ নামে নাম পরিবর্তন করে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে হাজিরা দেওয়ার শর্তে সে মুক্তি পায়। এ ফিরোজ ২০১৪-১৫ সালে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় মানব পাচার করে। এই শরিফ ফিরোজ সংঘটিত সোনালী এন্টারপ্রাইজ অত্র এলাকায় জমি দখল বন দখল, ভূমি দখল গাছ চুরি করে বিক্রি করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল। এলাকায় মাদক বিক্রি করার জন্য ছোট বাচ্চা এবং মহিলাদের কে নিয়ে সে খুচরা ও পাইকারি মাদক বিক্রি করতো। এবং বেশ কয়েকবার মাদকসহ তার বাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার হয়েছিল।
১৪ ই মার্চ ২২ ইং সংঘটিত ধর্ষণকাণ্ডে ভিকটিমের সাথে বৈবাহিক অবস্থা প্রমাণ করার জন্য একটি ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে একটি কক্ষে বিতর্কিত সংবাদ সম্মেলন করে মোস্তাক ডাকাত শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করে। কিন্তু র্যাবের তদন্তে এসব আসল ঘটনা উঠে আসে। এবং ফিরোজ ভিকটিমকে অকথ্য ভাষায় হুমকি দেয়। এবং ফিরোজ নিজেই স্বীকার করে সে পাঁচটি মামলার আসামি ও অস্ত্র মামলায় ১২ বছর জেল খেটেছে। যোগসাজশে অত্র ভিকটিমকে পূর্বেও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। গতকাল রাতে ঈদঁগাহ এলাকা হতে নির্জন আস্থানা তারই দখলকৃত জায়গা থেকে গ্রেফতার করি। এবং উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে অত্র এলাকা তল্লাশি করে অস্ত্র উদ্ধার করি।
এই গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাপারে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা আশা করছি এই গ্রেফতারের মাধ্যমে ঈদঁগাহ এলাকায় অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে এবং শান্তি ফিরে আসবে। সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি শেষ করেন তিনি।
Leave a Reply